তিন বিঘা করিডোর (Tin Bigha Corridor) বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ড, যা ভারতীয় সীমানার ভেতরে থাকা বাংলাদেশের একটি ছোট্ট অঞ্চলকে বাকি দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এটি একটি সংক্ষিপ্ত ভূখণ্ড যা দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত চুক্তির আওতায় ব্যবহৃত হয় এবং এর ঐতিহাসিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
তিন বিঘা করিডোরের অবস্থান
তিন বিঘা করিডোর বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ইউনিয়নের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত। এটি ভারতের ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে একটি সরু করিডোর, যা বাংলাদেশের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এনক্লেভকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
তিন বিঘা করিডোরের ইতিহাস
তিন বিঘা করিডোরের সৃষ্টি মূলত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সীমান্ত চুক্তির ফলাফল। ১৯৭৪ সালে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত “মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি” বা “ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি” অনুযায়ী, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এলাকার মানুষদের বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে যাতায়াতের জন্য এই করিডোরটি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে এই করিডোরটি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়, যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে।
করিডোরের গুরুত্ব
তিন বিঘা করিডোরের ভূখণ্ড খুবই ছোট, তবে এর গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। এটি দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এনক্লেভের প্রায় ২০,০০০ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সংযোগস্থল। এই করিডোরের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের বাকি অংশে যাতায়াত করতে পারে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান আকর্ষণ
১. সীমান্ত চুক্তির নিদর্শন: তিন বিঘা করিডোর একটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তির ফলাফল হিসেবে গড়ে উঠেছে। এটি দুটি দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
২. দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এনক্লেভ: দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এনক্লেভটি তিন বিঘা করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, যার ঐতিহাসিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
৩. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: করিডোর এলাকা এবং এর আশেপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সবুজের সমারোহ এবং সীমান্ত এলাকার বিশেষ ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
ভ্রমণের সময়
তিন বিঘা করিডোরে ভ্রমণের জন্য বছরের যেকোনো সময় উপযুক্ত। তবে, ভ্রমণের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হতে পারে, কারণ এটি একটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং নিরাপত্তার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে।
কিভাবে পৌঁছাবেন?
ঢাকা থেকে লালমনিরহাট জেলায় পৌঁছানোর জন্য বাস বা ট্রেন ব্যবহার করা যায়। সেখান থেকে পাটগ্রাম উপজেলায় গিয়ে তিন বিঘা করিডোরে পৌঁছানো সম্ভব। তবে, সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এবং বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কারণে ভ্রমণের আগে সঠিক অনুমতি এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা উচিত।
উল্লেখযোগ্য তথ্য: তিন বিঘা করিডোর একটি নিরাপত্তা সুরক্ষিত এলাকা হওয়ায় ভ্রমণের সময় সঠিক নথি এবং অনুমতি বহন করা জরুরি।
সতর্কীকরণ
তিন বিঘা করিডোর পরিদর্শনের সময় সীমান্ত সুরক্ষার জন্য প্রদত্ত নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি। এছাড়া, স্থানীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তির শর্তাবলী সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
Brief in English:
The Tin Bigha Corridor is a small strip of land that connects Bangladesh’s Dahagram–Angarpota enclave with the mainland of Bangladesh through Indian territory in the Cooch Behar district of West Bengal. This corridor was established as part of the India-Bangladesh Land Boundary Agreement, originally agreed upon in 1974 and fully implemented in 2011, allowing 24-hour access. The corridor plays a crucial role in connecting around 20,000 residents of the enclave with the rest of Bangladesh. Visitors need proper authorization due to the area’s sensitive nature, and it stands as a significant symbol of diplomatic relations between the two countries.
No Comment! Be the first one.