গোয়ালন্দ ঘাট (Goalanda Ghat) বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক নদীবন্দর। পদ্মা ও যমুনা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত এই ঘাটটি একসময় বাণিজ্যিক ও যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি কুষ্টিয়া (জগতি) থেকে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন উদ্বোধন করা হয়, যা পূর্ববঙ্গ ও আসামের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছিল।
গোয়ালন্দ ঘাটের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
- বাণিজ্যিক কেন্দ্র: গোয়ালন্দ ঘাট একসময় কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত স্টিমার সার্ভিসের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এখানে পদ্মার ইলিশ ও ‘গোয়ালন্দ চিকেন কারি’ বিশেষভাবে পরিচিত ছিল।
- রেলওয়ে সংযোগ: গোয়ালন্দ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন ১৮৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি কুষ্টিয়া থেকে গোয়ালন্দ পর্যন্ত রেলপথের শেষ স্টেশন ছিল। এটি পূর্ববঙ্গ ও আসামের মধ্যে যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল।
বর্তমান অবস্থা:
পদ্মা সেতুর নির্মাণের পর গোয়ালন্দ ঘাটের গুরুত্ব কিছুটা কমেছে। তবে, এটি এখনও স্থানীয়দের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
কিভাবে যাবেন:
- ঢাকা থেকে গোয়ালন্দ ঘাট: ঢাকা থেকে বাস বা ব্যক্তিগত পরিবহনে গোয়ালন্দ ঘাটে পৌঁছানো যায়। ঢাকা থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত বাসে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগে।
- গোয়ালন্দ ঘাট থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট: গোয়ালন্দ ঘাট থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে পদ্মা নদী পারাপার করা যায়।
সতর্কতা:
- গোয়ালন্দ ঘাট এলাকায় নদী ভাঙনের কারণে স্থান পরিবর্তন হতে পারে। সর্বশেষ তথ্যের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করুন।
- দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানজট হতে পারে; সময়মতো পৌঁছানোর জন্য পূর্ব পরিকল্পনা করুন।
গোয়ালন্দ ঘাট বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে ভ্রমণ করে স্থানীয় জীবনযাত্রা ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হওয়া যায়।
ফিচার ইমেজ: imran khan zahid
No Comment! Be the first one.