বিপিন পার্ক (Bipin Park) ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী বিনোদন কেন্দ্র, যা ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় ২০০ বছর পুরোনো এই পার্কটি শহরের বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের জন্য একটি জনপ্রিয় বিনোদন স্থান।
ইতিহাস:
বিপিন পার্কের নামকরণ করা হয়েছে ময়মনসিংহ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. বিপিন বিহারী সেনের নামে। ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক এম সাইফুল ইসলামের হাত দিয়ে পার্কটি উদ্বোধন হয়। পরে, শহরের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর তত্ত্বাবধানে বড় ধরনের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়।
সংস্কার ও আধুনিকায়ন:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপিন পার্কে আধুনিকায়নের কাজ হয়েছে। নতুন ঝরনা, ভাস্কর্য, ফুলের বাগান, পায়ে হাঁটার পথ, সীমানা প্রাচীর এবং বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে, যা পার্কটিকে আরও আকর্ষণীয় ও আরামদায়ক করে তুলেছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত এই পার্ক থেকে নদীর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। নদীতে নৌকা চলাচল দেখতে দেখতে সন্ধ্যায় শান্তিপূর্ণ সময় কাটানো যায়।
বিনোদন ও কার্যক্রম:
বিপিন পার্কে শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড, যেমন দোলনা, চাকা, রোলার কোস্টার ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া, পার্কে বসে চা, কফি, আইসক্রিম ও অন্যান্য খাবার উপভোগ করা যায়।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আসার জন্য বাস বা ট্রেন ব্যবহার করতে পারেন। বাসে ভাড়া প্রায় ৩২০ টাকা এবং সময় লাগে ২.৫ থেকে ৩ ঘণ্টা। ট্রেনে ভাড়া শ্রেণীভেদে ১২০ থেকে ৫০১ টাকা এবং সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
ময়মনসিংহ শহরে পৌঁছানোর পর, বিপিন পার্ক শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় রিকশা বা সিএনজি ব্যবহার করে সহজেই পৌঁছানো যায়।
থাকার ব্যবস্থা:
ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেমন:
- আমির ইন্টারন্যাশনাল
- হোটেল মুস্তাফিজ
- হোটেল সিলভার ক্যাসেল
- হোটেল হেরা
- হোটেল খাঁন ইন্টারন্যাশনাল
এছাড়া, ময়মনসিংহ শহরে কম খরচে গেস্ট হাউসও পাওয়া যায়।
খাবারের ব্যবস্থা:
ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন ধরনের খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। এছাড়া, বিপিন পার্কের আশেপাশে চা, কফি, আইসক্রিম ও অন্যান্য খাবারের স্টল রয়েছে।
সতর্কতা:
পার্কে প্রবেশের সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও পার্কের নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত।
উপসংহার:
বিপিন পার্ক ময়মনসিংহ শহরের একটি ঐতিহ্যবাহী বিনোদন কেন্দ্র, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিকায়ন ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমের জন্য পরিচিত। পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
ফিচার ইমেজ: শুভ্র সীমান্ত
No Comment! Be the first one.